প্রতিটি মৌলই তার সর্বশেষ শক্তিস্তরে নিষ্ক্রিয় প্যানের ইলেকট্রন বিন্যাসের প্রবণতা দেখায়। হিলিয়াম ছাড়া সকল নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাসে সর্বশেষ শক্তিস্তরে ৪টি করে ইলেকট্রন বিদ্যমান। অণু গঠনকালে কোনো মৌল ইলেকট্রন গ্রহণ, বৰ্জন অথবা ভাগাভাগির মাধ্যমে তার সর্বশেষ শক্তিস্তরে ৪টি করে ইলেকট্রন ধারণের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে। একেই 'অষ্টক' নিয়ম বলা হয়। যেমন: CH, অনুতে কেন্দ্রীয় পরমাণু কার্বনের সর্বশেষ শক্তিস্তরে ৪টি ইলেকট্রন বিদ্যমান। যেখানে এটি ইলেকট্রন কার্বনের নিজস্ব আর বাকি এটি ইলেকট্রন চারটি হাইড্রোজেন পরমাণু থেকে আসে। পাশের চিত্রে তা দেখানো হলো। এভাবে পরমাণুসমূহ তার সর্বশেষ শক্তিস্তরে ৪টি ইলেকট্রন ধারণ করে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভের মাধ্যমে যৌগ গঠনের পদ্ধতিকে 'অষ্টক' নিয়ম বলে।
'অষ্টক' নিয়মের কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে বিজ্ঞানীরা নতুন একটি নিয়মের উপস্থাপন করেন। যাকে 'দুই' এর নিয়ম বলা হয়। 'দুই' এর নিয়মটি অষ্টক নিয়ম থেকে অধিকতরউপযোগী এবং আধুনিক। নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলোর চিত্র 5.02: মিথেন অণুতে অণ্টক নিয়ম।
সর্বশেষ শক্তিস্তরে যেমন 2টি বা ৪টি ইলেকট্রন বিদ্যমান, তেমনি অণু গঠনে কোনো পরমাণুর সর্বশেষ শক্তিস্তরে এক বা একাধিক জোড়া ইলেকট্রন বিদ্যমান থাকবে, এটিই হচ্ছে 'দুই' এর নিয়ম। অর্থাৎ অণুতে যেকোনো পরমাণুর সর্বশেষ শক্তিস্তরে এক বা একাধিক জোড়া ইলেকট্রন অবস্থান করবে।
যেমন: BeCl2 অণুর কেন্দ্রীয় পরমাণু Be এর সর্বশেষ শক্তিস্তরে 2 জোড়া অর্থাৎ এটি ইলেকট্রন বিদ্যমান। BF; অণুর কেন্দ্রীয় পরমাণু B এর সর্বশেষ শক্তিস্তরে ও জোড়া অর্থাৎ এটি ইলেকট্রন বিদ্যমান। CH4 অণুর কেন্দ্রীর পরমাণু C এর সর্বশেষ শক্তিস্তরে 4 জোড়া অর্থাৎ ৪টি ইলেকট্রন বিদ্যমান। শুধু তাই নয় কেন্দ্রীয় পরমাণু ছাড়াও অন্য পরমাণুগুলো অর্থাৎ Cl এর সর্বশেষ শক্তিস্তরে 4 জোড়া অর্থাৎ ৪টি ইলেকট্রন বিদ্যমান।
F সর্বশেষ শক্তিস্তরে 4 জোড়া অর্থাৎ ৪টি ইলেকট্রন বিদ্যমান এবং H এর সর্বশেষ শক্তিস্তরে 1 জোড়া অর্থাৎ 2টি ইলেকট্রন বিদ্যমান। এক্ষেত্রে সকল পরমাণু ‘দুই' এর নিয়ম অনুসরণ করেছে। উল্লেখ্য, পর্যায় সারণির 1-20 পর্যন্ত মৌলসমূহ মূলত ‘অষ্টক’ ও ‘দুই’ এর নিয়ম ভালোভাবে অনুসরণ করে।
আরও দেখুন...